নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে আইফোন কেনার টাকা জোগাড় করতে নিজের অপহরণ ও ধর্ষণের নাটক সাজিয়েছেন মাহিয়া আক্তার নামে এক কলেজছাত্রী।
বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) দুপুর ১২টা ৩০ মিনিটে রূপগঞ্জ থানায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তরিকুল ইসলাম।
মাহিয়া আক্তার মুড়াপাড়া সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী। এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে তার দুই সহপাঠী সিফাত মিয়া ও সিনথিয়া আক্তারকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ।
ওসি জানান, “গত বুধবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে—মুড়াপাড়া কলেজের এক ছাত্রী অপহরণ ও গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন। পরে তার পরিবার থানায় একটি অপহরণের অভিযোগ দায়ের করে। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে পুলিশ প্রযুক্তির সহায়তায় তদন্ত শুরু করে।”
তদন্তে বেরিয়ে আসে ভিন্ন চিত্র। জানা যায়, মাহিয়া দীর্ঘদিন ধরে একটি দামি আইফোন কেনার জন্য পরিবারের কাছে চাপ দিচ্ছিলেন। টাকা না পেয়ে অপহরণ ও ধর্ষণের নাটক সাজান তিনি। এই পরিকল্পনায় সহযোগিতা করেন সহপাঠী সিফাত ও সিনথিয়া।
পরিকল্পনা অনুযায়ী, মঙ্গলবার সকালে মাহিয়া কলেজে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হন। এরপর ‘অপহরণকারী’ সেজে সিফাত তার মাকে ফোন করে এক লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন এবং হুমকি দেন, টাকা না দিলে মেয়েকে ধর্ষণ করা হবে।
পরদিন বুধবার মাহিয়াকে পাওয়া যায় বান্ধবী সিনথিয়ার বাসায়। নাটকের অংশ হিসেবে ঘুমের সিরাপ খেয়ে নিজেকে অচেতন করে কলেজের পেছনে ফেলে রাখেন তিনি। এরপর সিফাত আবার ফোন করে বলেন, “টাকা না দেওয়ায় মেয়েকে ফেলে গেলাম।”
পুলিশ মাহিয়াকে উদ্ধার করে রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে পরীক্ষার জন্য নারায়ণগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠায়।
ওসি তরিকুল ইসলাম বলেন, “ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
এই ঘটনায় রূপগঞ্জ জুড়ে চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। সচেতন মহলের মন্তব্য—“এ ধরনের নাটক শুধু পারিবারিক প্রতারণা নয়, এটি সমাজ ও প্রশাসনের সঙ্গে ভয়ঙ্কর প্রতারণা। এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত।”